একচেটিয়া আধিপাত্য শেষ হচ্ছে এবার। সর্বনিম্ন দরদাতা না হওয়ায় ফারাজ করিম চৌধুরীর প্রতিষ্ঠান এবার কাজ পাচ্ছে না। বাংলাদেশ রেলওয়েতে ডয়েজ ডিজেল ইঞ্জিনে যে সকল মালামাল ব্যবহৃত হয়, তা সাধারণত কেনা হতো আওয়ামীলীগের সাবেক সংসদ সদস্য, রেলওয়ে স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ফজলে করিম চৌধুরীর ছেলে ফারাজ করিম চৌধুরীর দুটি প্রতিষ্ঠান নেক্সট জেনারেরেশন গ্রাফিক্স লিমিটেড (NGGL) এবং এফএভি ডিজেল FAV Diesel থেকে।
আর এইগুলি ক্রয় করা হতো সরাসরি ক্রয়ের মাধ্যমে। অন্য কোন প্রতিষ্ঠানের এখানে অংশ গ্রহণের কোন সুযোগই ছিল না। এই বিষয়ে চৌধুরীরা সরকারী প্রভাব খাটিয়ে একচ্ছত্র আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেন এবং শুধুমাত্র তাদের প্রতিষ্ঠান হতে সরাসরি ডয়েজ ডিজেল ইঞ্জিনের মালামাল কেনার জন্য একটা নীতিমালা প্রণয়ন করেছিলেন।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, এই একচেটিয়া নীতিমালাটি ভেঙ্গে দেন বর্তমান প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক জনাব মো: বেলাল হোসেন সরকার। তিনি ডিজি রেলওয়ের অনুমোদন নিয়ে সরাসরি ক্রয় (ডিপিএম) হতে সবার অংশ গ্রহণের সুযোগ রেখে উম্মুক্ত দরপত্র বা ইজিপিতে ক্রয়ের ব্যবস্থা করেন।
সম্প্রতি ২৬ ও ২৭ মে ২০২৫ ইং ই-জিপি প্রকাশিত চারটি টেন্ডার আইডি নং ১০৯৩৮২৬, ১০৯৩৮৮৫, ১০৯৩৭৪৪, ১০৯২১৫ দরপত্র খোলার দিন ধার্য্য ছিলো। এই টেন্ডারে মোট আটটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অংশ নেন। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো অগ্রনী এন্টারপ্রাইস, আজমাইন ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, হামজা এসোসিয়েট, ইননেট বাংলাদেশ , মেসার্স এ এন্ড জে ইন্টারন্যাশনাল, মেসার্স কহিনুর এন্টারপ্রাইজ, নেক্সট জেনারেরেশন গ্রাফিক্স লিমিটেড এবং সেকুরা বাংলাদেশ লিমিটেড।
সূত্র জানায়, গত ২৪ জুন ২০২৫ কারিগরি উপকমিটি গঠন করা হয়। উক্ত কারিগরি কমিটির প্রতিবেদন ডিজি রেলওয়ের অনুমোদনের পরে তাদের ফিনান্সিয়াল দর উম্মুক্ত হয়।
এতে দেখা যায় যে, ৩ টা দরপত্রে দরদাতা গণ প্রাক্কলনের চেয়ে কম দর প্রদান করায় তাদের দর গ্রহণ করে মূল্যায়ন সম্পন্ন করা হয়। একটা দরপত্রে প্রাক্কলনের চেয়ে সকলে বেশি দর প্রদান করায় তা মূল্যায়ন করা হয়নি।
উক্ত তিনটি দরপত্রে সর্বনিম্ন দরদাতা না হওয়ায় ফারাজ করিম চৌধুরীর প্রতিষ্ঠান নেক্সট জেনারেশন গ্রাফিক্স লিমিটেড এবার কৃতকার্য হয়নি। ফলে চৌধুরী পরিবারের বহুদিনের একচেটিয়া ঠিকাদারীর অবসান হচ্ছে।
দরপত্রে equivalent উল্লেখ করা হয়নি কেনো? এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক জনাব মো: বেলাল হোসেন সরকার রেল নিউজকে বলেন, ৪ টা দরপত্রে কোন ব্রান্ড উল্লেখ করা হয়নি বিধায় equivalent উল্লেখ করার প্রয়োজন হয় নি।দরপত্রে Technical Specification দেওয়া হয়েছে। ১ টা দরপত্রে দরদাতাগণ প্রাক্কলনের চেয়ে বেশি দর প্রদান করায় তা গ্রহন না করে পূনরায় দরপত্র আহবানের সিদ্ধান্ত রেখে অন্য ৩ টা দরপত্রে কৃতকার্য দরদাতাকে NOA ইস্যু করা হয় ,কিন্তু কোন দরপত্রের বিপরীতে এখনো চুক্তিপত্র স্বাক্ষরিত হয়নি |