• শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৪৫ পূর্বাহ্ন

ফেসিস্ট স্বৈরাচারের দুই দোসর কুয়েটের ভিসি পদের জন্য আবেদন করেছেন, চালাচ্ছেন জোর লবিং

২৪ ঘন্টা / ১০৩১
শুক্রবার, ১১ জুলাই, ২০২৫

দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর নিয়োগ প্রদানের নিমিত্ত সুপারিশ প্রণয়নের লক্ষ্যে গত ১৮ মে ২০২৫ ইং তারিখে শিক্ষা উপদেষ্টা কে সভাপতি করে সার্চ কমিটি গঠনের পর গত ৪ জুন ২০২৫ ইং তারিখে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয় হতে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর নিয়োগ এর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় যার, আবেদনের সময়সীমা গত ২৬ জুন ২০২৫ ইং তারিখে শেষ হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য থাকলেও গত ১৯ মে ২০২৫ ইং তারিখে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য ক্যাম্পাস ত্যাগ করার পর হতে কার্যত অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। দীর্ঘ প্রায় ৫ মাস যাবত চলমান অচলাবস্থা এবং প্রশাসনিক শূন্যতা তৈরী হওয়ায় শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী সকলের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাইস চ্যান্সেলর হিসেবে ১৭ জনের আবেদন জমা হয়েছে যার মধ্যে ১২ জন উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক।
বিদ্যমান অচলাবস্থা ও সংকট নিরসনে এবং শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে অতি দ্রুতই একজন দক্ষ ভাইস চ্যান্সেলর নিয়োগ প্রদান আবশ্যক হয়ে পড়েছে।
এরই মধ্যে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেতে শুরু হয়েছে দৌড়ঝাপ,জোর লবিং এবং নানা তৎপরতা।
যে তালিকায় রয়েছেন আওয়ামী লীগ আমলের সর্বোচ্চ সুবিধাভোগী শিক্ষকদের একাংশ যারা ক্যাম্পাসে ফ্যাসিস্ট এর দোসর হিসেবে পরিচিত।
ত ও ই ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড: মহিউদ্দিন আহমদ যিনি ফ্যাসিস্ট এর দোসর হিসেবে সর্বাধিক পরিচিত, বিভাগ ও হলের নানা গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন থেকে দূর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন, তিনি ভাইস চ্যান্সেলর হিসেবে নিয়োগ পেতে জোরালো লবিং করছেন বলে জানা যায়,
ইতিমধ্যে নতুন পুরাতন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীদের সাথে যোগাযোগ করছেন বলেও একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। অধ্যাপক ড: মহিউদ্দিনের বিশ্ববিদ্যালয়ের তওই বিভাগের বিভাগীয় প্রধান এবং ছাত্রহলের দায়িত্ব পালন থেকে শুরু করে অন্যান্য দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে দূর্নীতি তে জড়িয়ে পড়েন বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক সূত্রে জানা যায়।
এছাড়াও আওয়ামী সরকারের আমলে অত্যন্ত সক্রিয় থেকে বাগিয়ে নেন নানা সুযোগ সুবিধা। তাকে ততকালীন ফেসিস্ট ছাত্রলীগের সেক্রেটারির মোটরসাইকেল এর পিছনে বসে মহড়া দিতেও দেখা গেছে। ছাত্রজীবনে তিনি চুয়েটে ছাত্রলীগের পদধারী নেতা হিসাবে সক্রিয়ভাবে আওয়ামী রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন যার ধারাবাহিকতা কুয়েটের শিক্ষক হিসাবেও বজায় রেখে চলছেন বলে অনেকে অভিমত দেন।

এই তালিকায় আরো রয়েছেন ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড: নূর নবী মোল্লা, যিনি ফ্যাসিস্ট আমলে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও উপ উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি কুয়েটের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন ছিলেন। স্বজনপ্রীতি এবং সুবিধাবাদী হিসেবেই যিনি অধিক পরিচিত। আওয়ামী সরকারের আমলে নানা সরকারি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেতে অত্যন্ত তৎপর ছিলেন তিনি,সেই সাথে দীর্ঘদিন ক্যাম্পাস এ অনুপস্থিত থেকেও আর্থিক সুবিধা গ্রহণের অভিযোগ ও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

এমতাবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারীগণ নতুন ভাইস চ্যান্সেলর নিয়োগ এর বিষয়ে একজন সৎ, দক্ষ, এবং সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিকে তাদের অভিভাবক হিসেবে পেতে আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং ফ্যাসিস্ট এর দোসর হতে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) রক্ষার দাবি জানান।
সেই সাথে অতি দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয় টির উপাচার্য নিয়োগের মাধ্যমে প্রশাসনিক শূন্যতা দূর করে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সরকারের প্রতি আহবান জানান।


এই ক্যাটেগরির আরও খবর